থানায় বসে ওসির উপস্থিতেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিলের ভাগাভাগি হচ্ছে। ওসির ভাষ্য সমঝোতার লক্ষ্যে মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের ভাগাভাগির ফলে সাধারণ জনগণ ও প্রকৃত জেলেরা সুবিধাবঞ্চিত নিত্যদিনের মতোই। এমন অভিযোগ সরেজমিনে।
কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার দামপাড়া মৌজার নোয়াপাড়া এলাকাসংলগ্ন সাহিধর বিলের বিবাদমান ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই। এলাকাবাসীর ধারণা, এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনার সমাধান হয় থানায় বসেই। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ইজারাদার মতি মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মান্নান, থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন, থানা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হৃদয়সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সমর্থক মতিউর রহমান ওরফে মতি মিয়া ২০১৬ সালে সাহিধর বিলের ইজারা নিয়েছিলেন। গত ২০২০ সালে নওগাও টাকিধর মৎস্য সমবায় সমিতির নামে ইজারা নেন তিনি। বিলটি সবশেষে ইজারা হয় ১৪ লাখ টাকায় মতি মিয়ার নামে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা এককভাবে দখলের চেষ্টা চালালে মতি মিয়া বাদি হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে থানা কর্তৃপক্ষ উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের ডেকে বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ১০ আনা আর বিএনপির নেতাকর্মীদের ৬ আনা অংশে ভাগবাটোয়ারার অনুমতি আসে।
সাবেক থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিনের কাছে মীমাংসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে ওসি সাহেব বিবাদমান ঘটনার মীমাংসা করে দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
ইজারাদার মতি মোবাইল ফোনে বলেন, ৪৮ একর ৫৩ শতাংশ জলাশয় ৬ বছর মেয়াদি ২০২০ সালে ১৪ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকতেই ভাগবাটোয়ারা চায়। এ বিষয়ে অভিযোগের পরে আজ মিমাংসা করে দেয়া হয়েছে ভাগাভাগি করেই। তবে ৪৮ একর ডাক নিয়ে কেন প্রায় আড়াই শ’ একরের কাছাকাছি ভোগ দখল করে থাকে এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বদরুল মোমেন মিঠু বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। তবে দীর্ঘদিন ধরেই শুনে আসছি নেতাকর্মীদের হিড়িক এ নিয়ে। যা একেবারেই অনুচিত।
নিকলী থানার ওসি মোশাররফ হোসেন এ বিষয়ে বলেন, শান্তির লক্ষ্যেই পিটিশনের ভিত্তিতে মিমাংসা করা হয়েছে। জলমহাল দখলকে কেন্দ্র করে খুনখারাবির আশঙ্কা ছিল। তাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে থানায় বসেই দ্রুত ঘটনাটি মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply