নিজস্ব প্রতিবেদক:
বর্ষবরণের শোভাযাত্রার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের বানানো ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার মুখাবয়ব ও শান্তির পায়রার কিছু অংশ আগুনে পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
এছাড়াও উক্ত ঘটনার কারণ খোঁজে বের করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার(১২ এপ্রিল) সকালে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আজহারল ইসলাম শেখ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ কর্তৃক পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপনের লক্ষ্যে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের চেষ্টায় বিভিন্ন ধরণের প্রতীকী মোটিফের সাথে প্রতীকী দানবীয় ফ্যাসিস্টের মোটিফ তৈরি করা হয়।
শনিবার ভোর আনুমানিক ৪টা ৫০ মিনিট এর সময় অনুষদের দক্ষিণ পার্শ্বের গেট সংলগ্ন এলাকায় প্যান্ডেলের ভিতরে থাকা শোভাযাত্রার জন্য নির্মিত বিভিন্ন ধরণের প্রতীকী মোটিফের মধ্যে ফ্যাসিস্টের প্রতীকী মোটিফ কে বা কাহারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে।
এতে আরো বলা হয়, উক্ত ঘটনা অনুসন্ধানের লক্ষ্যে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করা হয়েছে। এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।
এবিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, নববর্ষের শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য অনেকগুলো মোটিফের মধ্যে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রায়’ কীভাবে আগুন লাগল, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ শুরু করেছে।
এদিকে অপরাধীদের শনাক্তের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, আমরা অনুমান করছি কেউ পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়েছে। আবার তা নাও হতে পারে। ঘটনাস্থলে সিসি ক্যামেরা ছিল। ক্যামেরার পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়ায় এখনো ফুটেজ দেখা সম্ভব হয়নি। তবে ভিন্নভাবে এ ফুটেজ দেখার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, আমরা এবিষয়ে জরুরি মিটিং করছি। সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে পরবর্তী সময়ে তা জানানো হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এখানে প্রক্টরিয়াল বডি, ডিনদের মধ্যে থেকে একজন, চারুকলার একজনসহ মোট চারজন এই কমিটিতে থাকবেন বলে জানান তিনি।
মোটিফ নতুন করে তৈরি করার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা তো চারুকলা ও শিল্পীদের কাজ। এই ঘটনার পরবর্তী সময়ে তারা যেভাবে চাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেভাবে সহায়তা করবে।
নতুন করে মোটিফ বানানোর বিষয়ে চারুকলার ডিন অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, নতুন করে মোটিফ বানানোর সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি। আমাদের নিজেদের মধ্যে এখনো আলোচনা চলছে। বিকেলের আগে এই বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
Leave a Reply