জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামের মডারেটরের অভাবে টেলিগ্রামে বিস্তর অপরাধ ছড়ানো ও পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতার অভাবের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে ফ্রান্সের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী৷ এরই অংশ হিসেবে ফ্রান্স থেকে টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পাভেল দুরোভকে আটক করেছে ফ্রান্সের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শনিবার (২৪ আগস্ট) ফ্রান্সের ল্যা বুর্জে বিমানবন্দরে অবতরণ কালে তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানান ফ্রান্স পুলিশের একটি সূত্র। তবে ফরাসি কর্তৃপক্ষ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তার আটকের কথা জানায়নি।
টেলিগ্রাম এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ডিজিটাল সেবা আইনসহ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) আইন মেনে চলে এবং সে অনুযায়ী প্রতিনিয়ত নিজেদের উন্নত করে যাচ্ছে৷ তারা আরও বলেছে, “টেলিগ্রামের প্রধান নির্বাহী পাভেল দুরোভের লুকানোর কিছু নেই এবং তিনি কিছু দিন পরপর ইউরোপ ভ্রমণ করেন৷”
ফ্রান্স ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে দুরোভের৷ দুবাইভিত্তিক টেলিগ্রাম অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা তিনি৷ ২০১৪ সালে তার প্রতিষ্ঠিত ভিকে নামের একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম থেকে সরকারবিরোধীদের বাদ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে রাশিয়া ত্যাগ করেন তিনি৷ এনক্রিপ্টেড অ্যাপ্লিক্যাশন হিসেবে পরিচিত টেলিগ্রামের ১০০ কোটির মতো ব্যবহারকারী রয়েছে৷ রাশিয়া, ইউক্রেন ও সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের দেশগুলোতে এই অ্যাপ বিশেষভাবে জনপ্রিয়৷ ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম, টিকটক ও উইচ্যাটের পরেই এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক প্ল্যাটফর্ম৷
ফোর্বসের হিসাবে ১৫৫০ কোটি ডলারের মালিক দুরোভ৷ গত এপ্রিলে তিনি বলেছিলেন কয়েকটি সরকার টেলিগ্রাম অ্যাপ নিয়ে তার উপর চাপ দিয়ে যাচ্ছে৷ তবে টেলিগ্রামকে তিনি নিরপেক্ষ প্ল্যাটফর্ম হিসেবেই রাখবেন এবং “ভূরাজনীতির খেলোয়াড়ে” পরিণত হতে দেবেন না বলেও উল্লেখ করেন৷
বিশ্লেষকদের মতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে প্ল্যাটফর্মটি ভার্চুয়াল লড়াইয়ের ময়দানে পরিণত হয়েছে৷ রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর আগে জানিয়েছিল তারা দুরোভের সাক্ষাত চেয়ে প্যারিসকে চিঠি দিয়েছিল৷