বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্টের পর থেকে একটানা ১৯৯০ পযর্ন্ত দুই সেনা শাসক দেশ পরিচালনা করেছেন। ১৯৯১ থেকে জনগণের ভোটে নিবার্চিত রাজনৈতিক সরকার গণ ২০০৭ পযর্ন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।ক্ষমতায় থেকে সমগ্র দেশটা আবর্জনায় ভরে দিলেন । এই সময়ে দেশের বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় ছিল। ১৯৯১ থেকে বিএনপি জোট। আবার ১৯৯৬ থেকে আওয়ামী লীগ জোট । আবার ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি। তারপর স্বঘোষিত নির্বাচন তারপর ওয়ান ইভেলেন তারপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
কথা থাকে যে, সেই সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে উল্লেখিত দুই দলের অগণিত নেতা এমপি মন্ত্রী গ্রেফতার হয়েছিলেন। এমনকি আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপির চেয়ারম্যানপার্সন বেগম খালেদা জিয়াও জেলে গিয়েছিলেন।
তৎকালীন সেনা শাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ছিলেন ফখরুদ্দিন। তিনি ও তখন রাষ্ট্র সংস্কার নামে তিন মাসের মেয়াদ পার করে প্রায় দুই বছর লাগিয়েছিলেন। আর এই সময়ে আওয়ামী লীগ সহ সমমনা রাজনৈতিক দল গুলো তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে বিরাট ধরনের মিছিল মিটিং আন্দোলন শুরু করে দিলেন। অবশেষে নির্বাচন হলো।
সেই নির্বাচনে ২০০৮ এ আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলো। সেই ক্ষমতা দির্ঘদিন হলো। প্রায় ষোল বছর। কিন্তু যে দলের হাইকমান্ড সহ সেদিন দুর্নীতির জন্য জেল খেটে ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। আজকে আরেক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে এসে। সেই দলের নেতানেত্রী এমপি মন্ত্রী গণ প্রায় সবাই পলাতক সেই দুর্নীতির জন্য। এর মধ্যে কয়েক ডজন গ্রেফতার হয়েছে। শতাধিক মামলা চলমান। আরো মামলা হওয়ার আশংকা।
আমার প্রশ্ন হলো। সেই আওয়ামী লীগ তাহলে তারা সেদিন জেল খেটে কি কোনো ভালো শিক্ষা নিয়েছিল? সবাই বলবে না। তারা সেই তাদের মতো করেই চুরি করেছে। যদি একটি রাজনৈতিক দলের এই হয় জন্মগত চরিত্র। তাহলে আজকে ড. ইউনূস সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলছে।
এই কাজ চলার মধ্যেই বিএনপি জামায়াত সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আগামীতে নির্বাচন করবে মর্মে মাঠে নেমেছে। বা অনেকেই খুব জুড়েই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
যদি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই পুরানো রাজনৈতিক দল গুলোর পুরানো ধ্যান ধারণা থেকেই আবার নির্বাচনে কোনো পুরানো দল ক্ষমতায় আসে। তাহলে তারা যে দুর্নীতি করবে না। এরকম গ্যারান্টি ড. ইউনূস সরকারের কাছে আমার প্রশ্ন।
আমরা আগামীর সুন্দর দিনের দেখা পাওয়ার আশায় আগে রাষ্ট্র সংস্কার জরুরি নাকি রাজনৈতিক দল সংস্কার জরুরি। ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরের দিন থেকেই স্বঘোষিত ক্ষমতায় চলে আসছে বলে। লুটপাট সহ যেভাবে বিভিন্ন স্তরে চাদাবাজী শুরু করেছে। তা দেখে মনে হচ্ছে। রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল গুলোকে পরিপূর্ণ সংস্কার করতে না পারলে। বিজয়ের চেয়ে পরাজয় হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিষ্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী।
২৮/০৮/২০২৪