বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বুক-পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়ার গুলি লেগে গুরুতর আহত শিক্ষার্থী সিফাত হাসান (২০)। গত ১৯ জুলাই রংপুর জেলা হাই স্কুলের সামনে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে প্রায় ২শ' ছড়রা গুলিতে বিদ্ধ হলে সহপাঠীরা তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটি গ্রামের তার বাবার কাছে ফোন আসে আপনার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তখন তার বাবা হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পায় পিঠে, হাতে, বুকে, মাথাসহ প্রায় ২শ' স্থানে ছড়রা গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে। এমন সময় চিকিৎসক তার বাবাকে পেয়ে ২০ জুলাই রোগীর ছাড়পত্র তার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন, আপনার ছেলেকে নিয়ে যান, তা না হলে ছাত্রলীগের নেতারা এসে আবারো হামলা করতে পারে। নিরুপায় হয়ে সিফাতের বাবা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে এবং স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করে। তার শাররীক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে ১১ আগস্ট সিফাতকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি করা হয়। এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেই, তাকে আবারো রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য ছাড়পত্র দেয়। রংপুর হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানে চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হলে সিফাতকে ১৩ আগস্ট ছাড়পত্র প্রাদান করলে তাকে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দেয়। সেখনে উন্নত চিকিৎসা না পেয়ে আবারো সিফাতের বাবা নজরুল ইসলাম তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে হলে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন।
সিফাত এখন বাড়িতে কাতরাচ্ছে। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বাজারপাড়া কারিগরি মহাবিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। এলাকার অনেকে সিফাতকে দেখতে এসে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে। তার বাবা মাদরাসার একজন সহকারী শিক্ষক। অভাব অটনে তার সংসার চলে। এ মুহূর্তে সিফাতের বিদেশে উন্নতমানের চিকিৎসা করা না হলে তার জীবন সংকটের মুখে পরতে হবে। তার চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকারকে গ্রহণ করার জন্য তার পরিবার এবং এলাকাবাসীরা জোর দাবি জানিয়েছেন।