কিশোরগঞ্জের ভৈরবে স্বামী মাহবুবুর রহমানকে হত্যার দায়ে স্ত্রী মোছাঃ রোকসানা আক্তার (৩৪) ও তার প্রেমিক আসিফ আহম্মেদ (২৬) কে মত্যুদ্যণ্ড দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক শাম্মী হাসিনা পারভীন আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন। একই সাথে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি রোকসানা আক্তার ভৈরব উপজেলার চন্ডিবের উত্তর পাড়া গ্রামের মোঃ শহিদ মিয়ার মেয়ে ও তার প্রেমিক আসিফ আহম্মেদ একই এলাকার বাবুল আহম্মেদের ছেলে।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ভিক্টিম মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগে চাকরি করতেন। রোকসানার সাথে মাহবুবুর রহমানের ২০০৮ সালে বিবাহ হয়। তিনি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে “এসএসফিটার” পদে কর্মরত ছিলেন। চাকরীর সুবাদে ঢাকায় থাকা হতো মাহবুবুর রহমানের। সেখান থেকে প্রতি সপ্তাহের বুধবার কাজ শেষে নিজ বাড়ি ভৈরবের চন্ডিবের উত্তরপাড়া গ্রামে আসতেন। পরবর্তিতে শুক্রবার সকালে যথারিতি আবার অফিসের কাজে ঢাকায় চলে যেতেন।
তার স্ত্রীসহ আজিজুল (১৫) সামিউল (১২) ও সাদিয়া (৯) বছরের তিনটি সন্তান রয়েছে। ঘটনার দিন ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর দুইদিনের ছুটি নিয়ে রাত ৮টায় বাড়ি আসেন মাহবুবুর রহমান। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। এর আগে হত্যার উদ্দেশ্যে তার স্ত্রী রোকসানা আক্তার পায়েসের সাথে ঘুমের ঔষধ খাওয়ান। ওইদিন রাতে ২৮ নভেম্বর রোকসানা ও তার পরকিয়া প্রেমিক আসিফ আহম্মেদ মাহবুবুর রহমানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে আঘাত করে হত্যা করে। শুধু তাই নয় পরকিয়া প্রেমিক আসিফ আহম্মেদকে বিদেশ পাঠানোর জন্য রোকসানা এক লাখ টাকাও দিয়েছিল।
এ ঘটনায় বড় ভাই হাবিবুর রহমান তার ভাবী রোকসানা আক্তারকে আসামি করে ভৈরব থানায় মামলা দায়ের করেন। রোকসানা গ্রেফতারের পর তার সাথে আসিফ আহম্মেদের পরকিয়ার সম্পর্ক ও হত্যায় সে জড়িত ছিল বলে জানায়। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৩০ জুন ভৈরব থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাহালুল খান আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন রাখাল চন্দ্র দে ও আসামি পক্ষের অশোক কুমার সরকার।