আবু হানিফ,পাকুন্দিয়া প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে সিএনজিতে তুলে নিয়ে ইয়াবা থাকার অভিযোগ এনে টাকা ছিনতাই করা হয়েছে।গতকাল শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জেলা শহরের ঈশাখাঁ সড়কে ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের কাছে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী পাকুন্দিয়া উপজেলার তারাকান্দি বাজারের শরবত ব্যবসায়ী ইলিয়াস মিয়া।
ব্যবসায়ী ইলিয়াস মিয়া জানান, মালামাল কেনার জন্য তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে এসেছিলেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে তিনি ঈশাখাঁ সড়কে ড্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় তিন যুবক পুলিশ পরিচয়ে তার কাছে ইয়াবা থাকার অভিযোগ এনে ভয় দেখায় এবং থানায় নেওয়ার কথা বলে জোরপূর্বক একটি সিএনজিতে তুলে নেয়। পরে পথে দুর্বৃত্তরা ছুড়ি দেখিয়ে তার কাছে থাকা ২,৮৪০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তাকে ১০০ টাকা ফেরত দিয়ে দ্রুত সিএনজি নিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ও হাসপাতাল সূত্র বলছে, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে পুলিশি কার্যক্রম ভেঙে পড়ে। পরে পর্যায়ক্রমে সেটা স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করলেও হঠাৎ কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ও ডাকাতি বেড়ে যায়। ছিনতাইকারী ও ডাকাতের কবলে পড়ে মানুষ আহত হয়ে হাসপাতালে গেলে কিংবা থানায় মামলা হলে তা গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। কিন্তু অনেকে বাড়তি ঝামেলা এবং হয়রানির ভয়ে থানা-পুলিশ পর্যন্ত যেতে চায় না।
তাই থানায় ছিনতাই-ডাকাতির যে পরিসংখ্যান লিপিবদ্ধ করা হয়, তা প্রকৃত ঘটনার চেয়ে অনেক কম। অনেক সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো দেখাতে থানা–পুলিশ মামলা গ্রহণে গড়িমসি করে, এমন অভিযোগও আছে। আবার অনেক সময় ছিনতাইয়ের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার নজিরও রয়েছে।
পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালানোকে কেন্দ্র করে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপর পুলিশের ওপরও ব্যাপক হামলা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় অনেক থানা ভবন, পুলিশের টহল যান।
সরকারের পতনের পর থানায় কোনো পুলিশ ছিল না। পরে পুলিশ ফিরলেও যানবাহন ও জনবল-সংকটে পুলিশের টহল কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়নি। এ সুযোগে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কিছু এলাকায় গড়ে উঠেছে নতুন সন্ত্রাসী গ্রুপ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যদের কেউ কেউও ডাকাতিতে যুক্ত হয়েছে, এমন উদহারণও পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।