স্টাফ রিপোটার:
[ আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী ও বিএনপি সমর্থিত জনতা ]
ময়মনসিংহের নান্দাইলে সদ্য ঘোষিত উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ইয়াসের খান চৌধুরী পদবঞ্চিত বিএনপি নেতাকর্মীদের তোপের মুখে নিজ বাড়িতেই তাঁর সমর্থিত নেতাকর্মীদের তরিঘড়ি সংবর্ধনা নিয়েছেন। শনিবার (১লা মার্চ) বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের নিজ বাড়ি বাহাদুরপুর হাউজে এ সংর্বধনা গ্রহন করেন। উক্ত সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে ইয়াসের খান চৌধুরীর সমর্থিত নেতাকর্মী ও পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা পৃথক পৃথক অবস্থানে থাকার একপর্যায়ে নান্দাইল চৌরাস্তা সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে কমিটি বাতিলের দাবিদার বিএনপি সমর্থিত কর্মী মিলন ভূইয়া সহ উভয় পক্ষের ১২ জন আহত হয়। বর্তমানে গুরুতর আহত দুইজন মমেক ও কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এতে ইয়াসের খান চৌধুরী সমর্থিত বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রাসেল ও যুবদল কর্মী হাফেজ মামুন এর চৌরাস্তা দোকানপাট ভেঙ্গে দেয় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী। আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর ১৬ দিন ধরে ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল পদবঞ্চিত ও ত্যাগী বিএনপি নেতাকর্মীরা। জানাগেছে, উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ইয়াসের খান চৌধুরী নান্দাইলে আগমন করবেন বলে খবর পান পদবঞ্চিত নেতাকর্মীগণ। সেজন্য ওই আহ্বায়ককে উপজেলা সদরে যাতে কোন ধরনের সংবর্ধনা দিতে না পেরে সে লক্ষ্যে আন্দোলন ও কর্মসূচীর ডাক দেয়। উক্ত প্রতিক্রিয়ার খবর পেয়ে নান্দাইল বাহাদুরপুর নিজ বাড়িতে সুকৌশলে শনিবার ভোররাতে আগমন করেন সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ¦ আনোয়ারুল হোসেন খান চৌধুরীর পুত্র ইয়াসের খান চৌধুরী। তিনি ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সদ্য ঘোষিত নান্দাইল উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক। তবে তাকে সংর্বধনা জানাতে তৈরি হয়নি কোন ধরনের সংবর্ধনা তোরণ বা মোটরসাইকেল বহর। এপর্যন্ত উপজেলা সদরে কোন সংবর্ধনা ও মিটিং বা আনন্দ মিছিলের ব্যবস্থা করতে পারেনি উক্ত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃনব্দ। ফলে তৃণমুলে পদবঞ্চিত বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। এদিকে নান্দাইলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় শনিবার নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ ও যৌথবাহিনীর একাধিক টিম টহলে ছিলেন। ওই দিন সকালে আহ্বায়কের সমর্থিত নেতাকর্র্মীরা বিক্ষিপ্তভাবে তাঁর বাড়ির দিকে অগ্রসর হয়ে সেখানে জমায়েত হন। পরে উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে থাকা তাঁর সমর্থিত বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকগণের একাশং বাড়িতে তাঁকে তরিঘড়ি করে সংবর্ধনা প্রদান করে। তবে উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপি’র ওই আহ্বায়ক কমিটি’র অধিকাংশ নেতাকর্মীরা উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেখাযায়নি। এ বিষয়ে বিএনপি নেতা ইয়াসের খান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমানের নির্দেশে ১১ বছর পর নান্দাইল উপজেলা কমিটি হয়েছে। এই কমিটিতে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে আপনাদের সাথে নিয়ে কাজ করার জন্য। কাউকে অবমূল্যায়ন করা হবে না, তবে সবাইকে কাজ করতে এবং দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। যারা দলে সিদ্ধান্ত মানেন না, তারা তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত মানেন না। যারা দলের চেয়ে ব্যক্তির রাজনীতি করেন তারা বিএনপির কেউ না। এদিকে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের দাবি:- উপজেলা বিএনপি’র ১১২ সদস্য বিশিষ্ট আহব্বায়ক কমিটি ও ৮১ সদস্য বিশিষ্ট পৌর কমিটিতে আওয়ামী দোসর, টোকাই ও অযোগ্য ব্যক্তিদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাজপথে সক্রিয়, ত্যাগী, মামলা-হামলায় জর্জরিত অধিকাংশ নেতৃবৃন্দকে উক্ত কমিটিতে রাখা হয়নি। এছাড়া কমিটির নতুন আহ্বায়ক ইয়াসের খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে পদ বানিজ্যের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে নেতাকর্মীদের নিকট। ফলে নান্দাইলের বিএনপির নেতাকর্মীরা ও সাধারণ জনগণ এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে ১৬ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো সম্মেলন কিংবা কর্মী সভা না করায় দলীয় নেতাকর্মী ও বিএনপি সমর্থিত কর্মী-জনগণের মাঝে বিশাল ক্ষুভের সৃষ্টি হয়েছে। পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা আরও জানান, উপজেলা বিএনপি’র ওই দুইটি আহ্বায়ক কমিটিতে আওয়ামীলীগ ও তাদের দোসর ২৪ জন। বয়োবৃদ্ধ ও নিস্ক্রিয় ১২জন। ডাবল নাম আছে তিন জনের। অন্য উপজেলার বাসিন্দা একজন। উপজেলার বাহিরে অন্যত্র বসবাস করেন তিনজন। অপরিচিত দুই জন। এছাড়া ওই কমিটিতে যাদের স্থান দেয়া হয়েছে তাদেরকেও অবমূল্যায়িত করাও এক বিশেষ কারন হয়ে দাড়িঁয়েছে।