প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ৫:৫৩ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ১৫, ২০২৫, ১:২৮ পি.এম
ডিমলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্যসহ আওয়ামী নেতাদের পুনর্বাসন চেষ্টার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার :
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (টিসিএফ) মোঃ রুহুল মোসাদ্দেকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতা ও আওয়ামীপন্থী ডিলারদের পুনর্বাসনসহ প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্যের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ৪২ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়। ডিলার নিয়োগের সময় অধিকাংশ ডিলার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদ পদবীর নেতা ও আওয়ামীপন্থীদের ডিলার নিয়োগ করা হয়। গত ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনে স্বৈরাচারী ও দুর্নীতিবাজ আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে আওয়ামীলীগের পদ পদবীতে থাকা অনেক ডিলার মামলার আসামী হয়ে গাঁ ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। ঝুঁকিতে পড়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি।
এই সুযোগটি কাজে লাগায় ডিমলা উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক (টিসিএফ) রুহুল মোসাদ্দেক। গুঞ্জন ওঠে আওয়ামী পন্থী অধিকাংশ ডিলারের ডিলারশীপ বাতিল করা হবে। ইতিমধ্যে হাসানুর রহমান শাহ নামের একজন ডিলারের মৃত্যু ঘটে এবং ৪ জন ডিলার উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটির নেতৃত্ব পদে থাকায় গ্রেফতারের ভয়ে গাঁ ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। অভিযোগ রয়েছে, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের সময় ব্যাপক দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ঘুষ-বানিজ্য করে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি ।
বর্তমানেও তিনি আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পদে থাকা ও আওয়ামীপন্থী ডিলারদের পুনর্বাসন করার জন্য প্রতিজন ডিলারের কাছ থেকে ৪-৫ হাজার করে টাকা ঘুষ বাবদ আদায় করেছেন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেকের ঘুষ বাণিজ্য ও অপকর্মের বিষয়ে উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ গত ১৩ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করে। তদন্ত সাপেক্ষে দুর্নীতিবাজ খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নীলফামারী জেলার মুখপাত্র রাশেদুজ্জামান রাশেদ অভিযোগ করে বলেন, ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে ফ্যাঁসিবাদ আওমীলীগ সরকারের নেতাদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে তিনি ডিমলা উপজেলার পলাতক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এজেন্ডা হিসেবে কাজ করছেন। ঝু্নাগাছ চাপানী ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধবের ডিলার আব্দুস সালাম, মনিরুজ্জামান মানিক, কনেশ্বর রায় ও শফিউদ্দিন মানিক সহ অনেকে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহণের কথা স্বীকার করেন। তাছাড়া ও এম এসের ডিলার দেয়ার কথা বলে ডিসেম্বর মাসে স্হানীয় ব্যবসায়ী জহির উদ্দিনের নিকট থেকে ১লক্ষ টাকা ও মার্চ মাসে ৫৫ হাজার টাকা হাওলাদের কথা বলে হাতিয়ে নেন।
এ ছাড়াও খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের টিসিবি নিয়োগের কথা বলে বন্দর খগাখড়িবাড়ী গ্রামের নওয়াব আলীর কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে (নগদ) নাম্বারে ১৫ হাজার ও হাতে নিয়েছে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক বলেন, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যার, তিনি রংপুরে আছেন, সেখান থেকে ফিরুক স্যারের সাথে কথা বলে আমার বক্তব্য জানাবো। তবে আমাকে একটি মহল ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাসেল মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, তবে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সৈয়দ আতিকুল হকের সাথে এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিকবার মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
আমাদের খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2024.© আলোকিত সমাচার