মোঃ মিজানুর রহমান
কিশোরগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় তানিয়া আক্তার (৩০) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে কিশোরগঞ্জ সদরের মেডিল্যাব হেলথ কেয়ার সেন্টার
হাসপাতাল থেকে বাজিতপুর জহিরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। কিশোরগঞ্জ সদর থানায় মামলা নিতে গড়িমসি।
নিহত তানিয়া আক্তার( ৩০) কটিয়াদী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বপাড়া এলাকার মাহমুদ হাসান এর স্ত্রী ও উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের পিপুলিয়া গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের মেয়ে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১১ ই এপ্রিল শুক্রবার সকালের দিকে তানিয়া আক্তার( ৩০ এর )প্রসব ব্যথা শুরু হলে, কিশোরগঞ্জ সদরের স্টেশন রোডে মেডিল্যাব হেলথ কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর দুপুরের দিকে চিকিৎসক ডাঃ নাসিমাতুল জান্নাত মিতুল তাকে সিজার করাতে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান।দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে সিজারে ছেলে সন্তান জন্ম গ্রহন করে। তখন মা ছেলে উভয়ই সুস্থ ছিল।
কিন্তু সংকট থেকে যায় মায়ের। ঘন্টা দুয়েক পর রোগীকে ব্লাড দেয়া হয়। তারপরই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে সেখান থেকে রেফার্ড করে বাজিতপুর জহিরুল ইসলাম মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
তানিয়ার স্বামী মাহমুদুল হাসান বলেন,"শুক্রবার, দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে সিজারে ছেলে সন্তান জন্ম গ্রহন করে। তখন মা ছেলে উভয়ই সুস্থ ছিল। তারপর আমাদের সাথে এবং
পরিবার পরিজনের সাথে ২টা ৪০ মিনিটে রোগী তানিয়ার সাথে কথাবার্তা হয়, তখন স্বাভাবিক ছিল। পূর্বে ডাক্তার রক্ত সংগ্রহের কথা বলেনি, এমনকি ব্লাড না লাগানো কথাও আমাদেরকে জানায়।
কিন্তু পরবর্তীতে অন্যরোগীর ব্লাড তার শরীরে পুশ করে।রোগীর অস্থিরতার কারনে সাময়িক ব্লাড দেয়া বন্ধ রাখার পর পুনরায় ব্লাড প্রদান শুরু করে।অবস্থা জটিল হতে থাকলে রাত ৯টা ১০ মিনিটে
রিলিজ দিয়ে বাজিতপুর জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিতে বলে। কিন্তু পুলেরঘাট বাজার যেতে যেতেই রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। "
ভুল চিকিৎসার কারনে নবজাতক হারালো তার মাকে,ভাই হারালো তার বোনকে, স্বামী হারালো তার স্ত্রীকে, মা হারালো তার মেয়েকে। অবহেলা কার, দায় কার প্রশ্ন জনমনের? তানিযার ভাই রাজন বলেন, ‘আমার বোনকে তারা মেরে ফেলছে। কেন আগে বললো না রোগীর অবস্থা খারাপ। আমি তাদের বিচার চাই।’
এ বিষয়ে জানতে ডাক্তার নাসিমাতুল জান্নাত মিতুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কেন এমন হলো আমরা বলতে পারবো না। ওই চিকিৎসক আমাদের এখানে নিয়মিত সিজার করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের রিপোর্ট না করারও অনুরোধ জানান।
কিশোরগঞ্জ সদর থানার ওসি আব্দুল আল মামুন বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে।