বাংলদেশের বিপ্লবী আন্দোলনের অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, প্রবিন বামপন্থী নেতা, ‘বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর ৩য় মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভা ৭ জুলাই (রবিবার) বিকাল ৪টায় গোবিন্দপুর বাজার দলীয় কার্যালয়ে সামনে দলের জেলা সমন্বয়ক কমরেড আলাল মিয়া র সভাপতিত্বে অনুষ্টিত হয় । এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সদস্য কমরেড মাসুদ রেজা, জেলা ফোরামের সদস্য জমির উদ্দিন
সভাটি পরিচালনা করে জেলা ফোরামের সদস্য এবায়দুল ইসলাম আলোচনা সভার শুরুতে কমরেড মুবিবুল হায়দার চৌধুরীর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান ‘বাসদ (মার্কসবাদী)’—এর জেলা নেতৃবৃন্দ, দলের গণসংগঠন সমূহের জেলা নেতৃবৃন্দ।
কমরেড মাসুদ রেজা বলেন, “সর্বহারা নৈতিকতা ও উন্নত রুচি—সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর জীবন সংগ্রাম ও আচরণ দলের নেতাকর্মীদের সামনে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে সবসময় ছিল। তিনি যখন যেখানে অবস্থান করেছেন, সব সময় নেতা—কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের কাছে কমরেড শিবদাস ঘোষসহ মার্কসবাদী অথরিটিদের জীবন ও শিক্ষাকে তুলে ধরেছেন। দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ, রাজনীতি—অর্থনীতি, ইতিহাস, রুচি—সংস্কৃতি, শিল্প—সাহিত্য, সংগীতসহ জ্ঞানজগতের ও জীবনের সকল সমস্যা সম্পর্কে মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ধরানোর জন্য ক্লান্তিহীনভাবে আলাপ—আলোচনা করেছেন। নিজের হাতে তিনি অসংখ্য বিপ্লবী কর্মী, সাংগঠনিক ক্যাডার ও সমর্থক—শুভানুধ্যায়ী—দরদী তৈরি করেছেন। বাসদ—এর অভ্যন্তরে কমরেড শিবদাস ঘোষের শিক্ষার গুরুত্ব প্রসঙ্গে দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্যসহ বিপ্লবী দল গড়ে তোলার মূলনীতিগত প্রশ্নের মৌলিক পার্থক্য দেখা দিলে ২০১৩ সালের ১২ এপ্রিল কমরেড মুবিনুল হায়দারকে আহ্বায়ক করে ‘বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি নামে নতুন দল গঠিত হয় যা পরে কনভেনশনের মাধ্যমে বাসদ (মার্কসবাদী) নাম গ্রহণ করে। আদর্শগত প্রশ্নে পুরনো দলে বাহ্যিক সম্মান, প্রতিষ্ঠা, নিরাপদ জীবন থেকে বেরিয়ে এসে ৮০ বছর বয়সে শূন্য হাতে নতুন করে সংগ্রাম শুরু করার ঘটনা কমরেড মুবিনুল হায়দারের দৃঢ় চরিত্র, উচ্চ মনোবল ও গভীর আদর্শবাদের পরিচায়ক। সামগ্রিকভাবে বলা চলে কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর সংগ্রামের ফলে বাংলাদেশে মার্কসবাদের এক সঠিক উপলব্ধি ও জীবনব্যাপী চর্চা এবং বামপন্থী আন্দোলনে এক নতুন ধারা প্রবর্তিত হয়। আজ দেশে এক ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী শাসন চলছে। জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া । আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি থেকে ঋণ নিচ্ছে ভতূর্কি তুলে দেয়ার শর্তে। ফলে গ্যাস—বিদ্যুৎ—শিক্ষা—চিকিৎসা সব ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে। ভারতের সাথে দেশের স্বার্থ বিরোধী চুক্তি করছে। ৪০০ বছর ধরে বংশপরম্পরায় বসবাসকারি হরিজনদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে। অথচ সরকারি বিভিন্ন উচ্চ পদে থাকা কর্মকর্তাদের নামে প্রতিদিন দূনীর্তি লুটপাট, ভূমি দখল এর ঘটনা জনসমক্ষে আসছে। এর বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাসদ (মার্কসবাদী)—সহ বামজোট সে আন্দোলনে সকলের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করছে।”