1. admin@alokitoshomachar.com : sh@admin :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ও মাদক নিমূল আলোচনা সভা সাংবাদিকের ভালোবাসার টানে ঘর ছেড়েছেন,ডেনমার্কের রোমানা মারিয়া হোসেনপুর সরকারি মডেল পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষকের ভুয়া সনদে পদোন্নতির অভিযোগ কটিয়াদীতে বাণিজ্য মেলা বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদ সভা নান্দাইলে অসহায় পরিবারের জায়গা দখলে রেখেছে প্রভাবশালী ব্যক্তি বিয়ে শেষে ভাগ্নিকে এগিয়ে দিতে গিয়ে খুন হলেন মামা নান্দাইলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জায়গা দখলের অভিযোগ নান্দাইলে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনামন্ত্রীর ভাতিজা যুবলীগ নেতা ফারুক গ্রেফতার বাজিতপুরের বলিয়াদীতে অজু খানা উদ্বোধন করেন জামায়াত নেতা অধ্যাপক রমজান আলী ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশী আকরাম হোসেন নিহত হয়েছে 

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য করাও ইবাদত।

  • প্রকাশিত: সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪
  • ১২৫ বার শেয়ার করা হয়েছে।

হাফিজ মাছুম আহমেদ দুধরচকী।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য করাও ইবাদত।প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ যে কোনো বিপর্যয়ে মানুষ যখন বিপদাপন্ন ও বর্তমানে বন্যার কারণে মানুষ দিশেহারা অবস্থায় এ সময় তাদেরকে আর্থিক সহায়তা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন ও চিকিৎসাসেবা দানসহ যে কোনো ধরনের সাহায্য সহযো গিতা করাও আল্লাহর ইবাদত। ইসলাম মানবিক কারণে সামান্য পরিমাণ সহায়তাকেও খাটো করে দেখে না। সে জন্য অতিশয় নগণ্য পরিমাণ দানকেও উৎসাহিত করা হয়েছে।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দান-সাদকা দেয়, তা একটি খেজুর পরিমাণও হোক না কেন, আল্লাহ পাক তা নিজ হাতে গ্রহণ করেন। তবে শর্ত এই যে, তা বৈধ পথে উপার্জিত হতে হবে। কেননা, আল্লাহ এই বস্তুকেই পছন্দ করেন এবং তা বৃদ্ধি করে নেন আর তা এতটাই যে, এই খেজুর এক পাহাড় পরিমাণ হয়ে যায়।’ ( বুখারি ও মুসলিম)

এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! আমি তোমাদের যে জীবনের উপকরণ দিয়েছি, তা থেকে তোমরা ব্যয় করো সেদিন আসার পূর্বেই, যেদিন কোনো বেচাকেনা, বন্ধুত্ব এবং সুপারিশ থাকবে না।’ (সুরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৫৪)

সাহায্যকারীর দান কখনো বৃথা যায় না (যদি-না তা লোক দেখানো হয়ে থাকে)।উল্লেখ করে নবী করিম (সা.) ঘোষণা করেন, ‘একটি রুটি দানের কারণে তিন ব্যক্তিকে জান্নাতে পাঠানো হবে। ১. আদেশদাতা, ২. রন্ধনকর্তা, ৩. সেই পরিবেশনকর্তা যে রুটি নিয়ে গরিবকে পরিবেশন করেছে।’ (হাকিম, তাবারানী)

হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘রোজ কিয়ামতের দিন মানুষ বর্ণনাতীত ক্ষুধা-পিপাসা নিয়ে উলঙ্গ অবস্থায় উত্থিত হবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দুনিয়াতে মানুষকে খাদ্য দান করেছে, সেদিন তাকে খাদ্য দান করা হবে। যে আল্লাহকে খুশি করার জন্য মানুষকে পানি পান করিয়েছে, তাকে সেদিন পানি পান করিয়ে তার পিপাসা দূর করা হবে। যে মানুষকে বস্ত্র দান করেছে, তাকে সেদিন বস্ত্র পরিধান করিয়ে তার লজ্জা নিবারণ করা হবে।’ অন্য হাদিসে উল্লেখ আছে, ‘হাশরের ময়দানে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দানশীল লোকেরা তাদের দানের ছায়ার নিচে অবস্থান করবে।’

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সবসময় অন্যের বিপদ-আপদ ও দুঃখ-কষ্ট মাথায় রেখে উম্মতদের জীবন-যাপনের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি নিজেও বিপদে-আপদে রুগ্‌ণ মানুষের সেবা করেছেন, অন্যদের দান-সাদকা ও বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করার ব্যাপারে উৎসাহিত করে বলেছেন, ‘তোমরা দান-সাদকা করো। এতে আল্লাহ খুব খুশি হন ও দানকারীর সম্পদ বাড়িয়ে দেন।’ যে ব্যক্তি শুধু প্রথাগত ইবাদত করে কিন্তু আল্লাহর রাস্তায় বিপদগ্রস্ত ও আর্তমানবতার কল্যাণের জন্য দান-খয়রাত, জাকাত-সাদকা, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসে না, সমাজের অসহায়, দুর্গত, ক্ষতিগ্রস্ত গরিব-দুঃখী মানুষের অভাব দূরীকরণ, চরম ক্ষুধা নিবারণ ও দারিদ্র্য বিমোচনে দানের হাত সম্প্রসারণ করে তাদের পাশে দাঁড়ায় না, ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজে অংশগ্রহণ করে না, সে আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-এর কাছে কখনোই প্রিয়ভাজন হতে পারবে না।

ইসলামের বিধান অনুযায়ী, বিপদাপন্ন মানুষকে সাহায্য করতে গিয়ে যদি নিজেদের অভ্যস্ত জীবনযাত্রায় সামান্য ব্যয় সংকোচনের প্রয়োজন হয়, এতে তাদের কুণ্ঠিত হওয়া উচিত নয়। তাই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এই দুঃসময়ে অসহায় বিপদগ্রস্ত মানুষের দিকে সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া প্রতিটি সামর্থ্যবান মানুষের জন্য অবশ্য করণীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবাই বিপদগ্রস্তদের পাশে এগিয়ে এলে এ দুর্যোগময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করা মোটেও কঠিন হবে না।

বিপদগ্রস্ত অভাবীদের সাহায্য সহযোগিতার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। আমি তোমাদের যা দিয়েছি তা থেকে মৃত্যুসর্য্যা আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবে, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলেন না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’ (সুরা মুনাফিকুন : ৯-১০)

সুরা বাকারাহর ১৯৫ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের মুখোমুখি কর না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদের ভালোবাসেন।’

‘আর আল্লাহ যাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর। বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর। যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে। আর আসমানসমূহ ও জমিনের উত্তরাধিকার আল্লাহরই জন্য। আর তোমরা যা আমল কর সে ব্যাপারে আল্লাহ সাম্যক জ্ঞাত।’ (সুরা আল-ই ইমরান: ১৮০)

‘যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর, তবে তা কতই না উত্তম। আর যদি দান গোপনে কর এবং অভাবগ্রস্তদের দিয়ে দাও, তবে তা তোমাদের জন্য আরও উত্তম। আল্লাহতায়ালা তোমাদের কিছু গুনাহ দূর করে দেবেন। আল্লাহ তোমাদের কাজকর্মের সব খবর রাখেন।’ (সুরা বাকারাহ : ২৭১)

দান সদকার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘খেজুরের একটি টুকরা দান করে হলেও তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা কর।’ (বোখারি ও মুসলিম)

মহাগ্রন্থ আল কোরআনে দানের কথাটি সালাত বা নামাজের মতোই বিরাশিবার উল্লেখ হয়েছে। ‘জাকাত’ শব্দটি পবিত্র কোরআনে আছে বত্রিশবার, নামাজের সঙ্গে কোরআন মাজিদে আছে ছাব্বিশবার; স্বতন্ত্রভাবে কোরআন কারিমে আছে চারবার; পবিত্রতা অর্থে রয়েছে দুবার। জাকাত কখনো ‘সদাকাহ’ এবং কখনো ‘ইনফাক’ শব্দ দ্বারা বোঝানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইনফাক শব্দটি ব্যাপক, সদাকাহ শব্দটি সাধারণ ও জাকাত শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কখনো কখনো এর ব্যতিক্রমও হয়েছে, অর্থাৎ এ তিনটি শব্দ একে অন্যের স্থলে ব্যবহার হয়েছে।

দানের প্রাথমিক সুনির্দিষ্ট খাতগুলো কোরআন কারিমে উল্লেখ হয়েছে এভাবে, ‘মূলত সদাকাত হলো ফকির, মিসকিন, জাকাতকর্মী ১ (খলিফা কর্তৃক নিযুক্ত জাকাত ব্যবস্থাপনায় কর্মরত ব্যক্তির মজুরি), অনুরক্ত ব্যক্তি, ক্রীতদাস, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথে জিহাদ (মানবতা, মানবাধিকার ও মানবসভ্যতার সুরক্ষার জন্য) ও বিপদগ্রস্ত বিদেশি মুসাফিরের জন্য। এটি আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞানী ও পরম কৌশলী।’ (সুরা-৯ তাওবা, আয়াত: ৬০)।

মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যেন উপরোক্ত কথা গুলোর উপর আমল করার তাওফিক দান করেন। আমিন।

লেখক : বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জকিগঞ্জ উপজেলা সচেতন নাগরিক ফোরাম সিলেট।

আপডেট সংবাদ পেতে আলোকিত সমাচার পড়ুন, সংবাদটি শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি