জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

এক মাসে প্রশাসনের শীর্ষ পদে রদবদল-পদোন্নতির পরিসংখ্যান দিলেন ড. ইউনূস

দায়িত্ব নেওয়ার একমাসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ১৯৮টি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদ ও প্রশাসনের কত কর্মকর্তার দফরত বদল, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল ও পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে তাও তুলে ধরেছেন তিনি।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এসব তথ্য জানান।

ড. ইউনূস বলেন, অতি স্বল্প জনবল নিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করা হলেও প্রথম দিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে পাঠানো বিবিধ প্রস্তাব বিষয়ে দ্রুত গতিতে এবং আইনগত সমস্ত বাধ্যবাধকতা মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত একমাসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ১৯৮টি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জনপ্রশাসনের ১৩৫ জন অতিরিক্ত সচিব, ২২৭ জন যুগ্মসচিব ও ১২০ জন উপসচিবকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। ৫৯টি জেলার জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং নতুন ৫৯ জন জেলা প্রশাসককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৬৭ জন কর্মকর্তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। ১০ জন যুগ্ম সচিব, ৮ জন অতিরিক্ত সচিব ও ৬ জন সচিবকে ওএসডি করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ পুলিশের ৮০ জন ডিআইজি, ৩০ জন পুলিশ সুপারসহ ১১০ জনকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। ১ জন ডিআইজি, ১ এডিশনাল ডিআইজি এবং ৪ জন পুলিশ সুপারকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়েছে।

এছাড়া আইজিপিসহ ১০ জন অতিরিক্ত আইজি, ৮৮ জন ডিআইজি, ২১ জন এডিশনাল ডিআইজি এবং ১৭৭ জন পুলিশ সুপারসহ মোট ২৯৭ জন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ড. ইউনূস বলেন, অতীতে শুধুমাত্র আওয়ামী মতাদর্শী না হওয়ার কারণে ২৮তম থেকে ৪২তম বিসিএস পর্যন্ত বিপিএসসি কর্তৃক সুপারিশকৃত অনেক প্রার্থী নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছেন। ৮ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এর মধ্যে ২৫৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মাঠ প্রশাসনকে জনবান্ধব, দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিমূলক ভাবে গড়ে তোলার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের বাধ্যতামূলকভাবে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং এটা প্রতি বছর তাদের করতে হবে।

তিনি বলেন, ধ্বংস হয়ে পড়া একটা জনপ্রশাসনকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি। মন্ত্রনালয়গুলোর উচ্চতম পদে যারা নিয়োজিত ছিলেন তারা অনেকে দায়িত্ব ছেড়ে চলে গেছেন কিংবা পদে থাকলেও সহকর্মীদের চাপের মুখে কাজ করতে পারছিলেন না। বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেছেন। আর যারা ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের আমলে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন কিংবা দায়িত্ববিহীন অবস্থায় একই পদে থেকে যেতে বাধ্য হয়েছেন তাদের সবার কথা বিবেচনায় নিয়ে জনপ্রশাসনকে নতুন করে দাঁড় করানোই ছিল আমাদের কঠিনতম সময়। আবার সকল সমস্য সমাধান করে একটি নতুন জনপ্রশাসন কাঠামো দাঁড় করাতে পেরেছি এটাই আমাদের প্রথম মাসের সবচাইতে বড় অর্জন। আমার বিশ্বাস এই জনপ্রশাসন জনগণের ইচ্ছা পূরণে সর্বোচ্চ অবদান রাখতে পারবে।