জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম বলেছেন, ‘বাংলাদেশে প্রত্যেকে তার রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করার অধিকার আছে। রাজনীতির বিষয় জনগণের কাছে বলার অধিকার আছে, নির্বাচন করার অধিকার আছে। তবে সেটা কোনোভাবেই যেন প্রশ্নের মধ্যে না পড়ে। নতুন রাজনৈতিক দল যেটা আসতেছে সেটাকে আমরা স্বাগত জানাই। তারা জনগণের ওপর ভর করে অগ্রসর হবে; সরকারের ওপর ভর করে অগ্রসর হবে না আমরা এটাই প্রত্যাশা করি।’
শনিবার ১ মার্চ দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে সমসাময়িক বিষয়ে এসব কথা বলেন আবদুস সালাম।
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান নিরপেক্ষ সরকারের ওপর যেন নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন না আসে আমরা সেটাই কামনা করব। তাদের জন্য শুভ কামনা; আমরা চাই তারা সামনের দিকে এগিয়ে যাক। জনগণের কাছে যাক, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে; জনগণ যাকে ক্ষমতা দেবে সেই রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, এই আশা ও ভরসা নিয়েই যেন আমরা মাঠে থাকি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এই সরকার (অন্তর্বর্তী সরকার) কে একটা স্বার্থক সরকার হিসেবে দেখতে চাই। এই সরকার যাতে ব্যর্থ না হয় সেজন্য আমরা সবাই সজাগ ও সতর্ক থাকব। প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল- আমরা যারা আন্দোলন করেছি; ছাত্র যুবক শ্রমিক যারাই এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছি। কাজেই আমাদের সবার দায়িত্ব থাকবে ড. ইউনূসের সরকারকে নিরপেক্ষ রেখে এই সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারি। আমাদের সবার ভুমিকা যেন সেই অবস্থায় থাকে। সবার কাছে আমরা সেটা প্রত্যাশা করছি।’
এসময় জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতি পরামর্শ দেন আবদুস সালাম। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করেছি একসাথে, ফ্যাসিবাদকে বিতাড়িত করতে একসাথে ছিলাম। একটাই কথা- ফ্যাসিবাদ যাতে আবার ফিরে না আসতে পারে সেজন্য এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
ছাত্রদের প্রতিনিধি সরকারের আছে এই বিষয়টি কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করি বলেদিলাম- সেই বিষয়টি সরকারকেও বুঝতে হবে। আমরা চাই না কোনোভাবেই যেন ড. ইউনূসের সরকারের নিরপেক্ষতার প্রশ্নে দাগ আসুক। এটা আমরা চাই না। আগামী নির্বাচন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। যেকারণে আমরা শেখ হাসিনাকে বারবার বলেছি- ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্বাচন করুন কিন্তু তিনি সেটা করেনি। কাজেই একটা দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্যই ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকারকে বসানো হয়ছে। তাই নিরপেক্ষতা এই সরকারের কাছে সবাই আশা করে। আমরাও আশা করব; আমরাও যেন কোনোভাবে আমার স্বার্থে এই সরকারকে ব্যবহার না করি।’
আবদুস সালাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তো নাই। দলটির নেত্রী নিজেই তো তার দলের কথা চিন্তা করেনি। যদি দলের কথা চিন্তা করত তাহলে অবশ্যই সে গণতন্ত্রের পথে থাকত। সে গণতন্ত্র নিয়ে থাকেনি। আমরা বাব বার বলেছিলাম- নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের পথ বন্ধ করিয়েন না; কিন্তু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের পথ রাখেননি। পথ বন্ধ করলে সবাই ঐক্যবদ্ধ অভূৎত্থানের মাধ্যমে আপনাকে (শেখ হাসিনা) তাড়াবে। কিন্তু জনগণের শক্তির ওপরে সে বিশ্বাস করে নাই। বিশ্বাস করেছিল তার প্রশাসনিক শক্তি ও প্রতিবেশি রাষ্ট্রের শক্তির ওপর। কাজেই জনগণ আবার আওয়ামী লীগের বেকুয়াম বিশ্বাস করে না।’
তিনি বলেন, ‘এই দেশের মানুষের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক আছে। বিএনপিকে শেষ করতে অনেককিছু করা হয়েছিল, কিন্তু বিএনপি জনগণের সঙ্গে থেকে প্রমাণ করেছে খালেদা জিয়া দেশ ছেড়ে পালায় নাই। এতো কিছুর পরও তারেক রহমান পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করে নাই। দেশের বাইরে অবস্থান করেও তিনি সংগ্রাম করে গিয়েছেন। কিন্তু কই; আওয়ামী লীগের নেত্রী কোথায়? সে তো পালিয়ে গেছে? কাজেই বেকুয়াম কিসের? জনগণের মধ্যে কোনো বেকুয়াম নাই।’
Leave a Reply