1. admin@alokitoshomachar.com : sh@admin :
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সরকারি অর্থায়নে ৬ লেনের রাস্তা ও চীন সরকারের অর্থায়নে ১টি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের দাবি বরিশালবাসীর কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা ডিমলায় ড্রেন নির্মাণকে কেন্দ্র করে নিহত-১  এবার জ্বালানি উপদেষ্টার পিএসকে অব্যাহতি পবিত্র হজযাত্রীদের সেবা সহজীকরণের জন্য মোবাইল অ্যাপ ‘লাব্বাইক’ উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আল্লাহ্ কে, আপনি কি তাঁর পরিচয় জানেন কিশোরগঞ্জ লিগ্যাল এইড দিবস উদযাপিত নান্দাইলে শিক্ষার মান উন্নয়নে ইউএনও’র আকস্মিক স্কুল পরির্দশন কিশোরগঞ্জে মিষ্টির বক্স থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার ডিপ্লোমাকে ডিগ্রি সমমানের দাবিতে কিশোরগন্জে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে নার্সিং ইনস্টিটিউট

ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৭০ বার শেয়ার করা হয়েছে।

স্টাফ রিপোর্টারঃ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে মেসার্স শিরিন ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে খাবার সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হলেও রোগীদের অভিযোগ, খাবারের মান অত্যন্ত নিম্নমানের এবং পরিমাণও অনেক কম।
সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতাল প্রবেশ মুখেই ময়লা আবর্জনার স্তূপের বাগার। শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অনুপযুক্ত, যেখানে কিলবিল করছে কীট পতঙ্গ । মেঝে ও দেয়ালে দেখা যায় পানের পিক ময়লার দাগ। যত্রতত্র পড়ে রয়েছে ব্যবহৃত স্যালাইনের সরঞ্জাম ও ওষুধের কার্টুন। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির পরিবেশ নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত, যা চিকিৎসা গ্রহণের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত পরিবেশ ।
অভিযোগ পাওয়া গেছে , মেসার্স শিরিন ট্রেডার্স নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি কাগজে-কলমে দায়িত্ব পেলেও মূলত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডাঃ মোঃ রাশেদুজ্জামান রাশেদ এর নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইজিপি টেন্ডারে চার নম্বরে থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র স্বাস্থ্য কর্মকর্তার যোগসাজশে এই কাজটি বাগিয়ে নিয়েছে উক্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এতে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা গচ্ছা গেছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
হাসপাতালে প্রতিদিন সকালে রোগীদের দুইটি পাউরুটি, একটি সিদ্ধ ডিম ও এক চামচ চিনি দেওয়া হয়। দুপুরে দেওয়া হয় ৭.৫০ গ্রাম ওজনের সিলভারকাপ মাছ, ১০০ গ্রাম মোটা চালের ভাত, ডাল ও ভাজি মেশানো তরকারি। রাতে প্রায়শই দুপুরের অবশিষ্ট খাবার সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। অথচ টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী, সপ্তাহে চার দিন মাছ এবং দুই দিন মাংস দেওয়ার কথা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হচ্ছে।
সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর প্রতিদিনের খাবারের জন্য ১২৫ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। যেখানে সকালে দুইটি পাউরুটি, দুইটি সিদ্ধ ডিম, একটি কলা ও ২০ গ্রাম চিনি; দুপুরে ও রাতে ১০০ গ্রাম মাছ, ২০০ গ্রাম ভাত, ২০ গ্রাম ডাল এবং পরিমাণ মতো সবজি দেওয়ার কথা। তবে ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, সরবরাহ করা হচ্ছে সিলভারকাপ, বার্মিজ রুই, তেলাপিয়া মাছ এবং মোটা চালের ভাত। অনেক সময় পচা ও বাসি তরকারি এবং পরিমাণেও কম খাবার পরিবেশন করে ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে একাধিকবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেও কোনো ফল হয়নি মর্মে রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা জানান।
এই প্রতিনিধির সাথে কথা হয় কয়েকজন রোগীর। উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গারহাট এলাকার বকুল নামের এক রোগী জানান, “চার দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। পাতলা ডাল দেয়। মাছ মাংসে ঝাল বা মসলার কোনো স্বাদ নেই। আর যে ভাত দেয় সেটা খাওয়ার অনুপযোগী।
খগাখরিবাড়ী ইউনিয়নের টুনিরহাট এলাকার মহিলা ওয়ার্ডের ১১ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন নুরজাহান বেগম বলেন, হাসপাতালের রান্না করা তরকারিতে মসলা ছাড়া। দুপুরের খাবার কোনোমতে খাওয়া গেলেও রাতের খাবার মুখে দেয়ার মত না।
বালাপাড়া সুন্দরখাতা গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মুনতাহানা বেগম মহিলা ওয়ার্ডের ১৩ নম্বর বেডে শুয়ে বলেন, “বাবা যে ভাত দেয়, পেট ভরে না। আরও চাইলে দেয় না। ক্ষুধ নিয়েই থাকতে হয়। চিকিৎসা করাতে এসেছি, টাকা তো আর নেই যে বাইরে থেকে কিনে খাবো।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, খাবার খাওয়ার অযোগ্য হওয়ায় বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে খাবার কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও, খাবার সরবরাহও দেরিতে হচ্ছে। প্রায়শই সকাল ৮টার পরিবর্তে ১০টা থেকে ১০:৩০ টার মধ্যে খাবার আসে। এমনকি অনেক সময় খাবারের মানও ঠিক থাকে না। উপজেলা খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশ পুকুর গ্রামের আব্দুল জলিল মন্ডল, যিনি তিন দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি, তিনি সংবাদকর্মীকে বলেন, “সকালে দুইটা বাসি পাউরুটি আর একটু চিনি দিয়েছিল, যা খাওয়া যায়নি। দুপুরে অল্প ভাত আর আধ পিস মাছ দিয়েছিল, সাথে তরকারিও ছিল। মাছ অপরিষ্কার থাকায় ফেলে দিয়েছি। রাতের খাবার মুখে দেওয়া যায় না। আর দিলেও তা পচা-গন্ধযুক্ত ও পাথর মেশানো থাকে, যা খাওয়ার অযোগ্য। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কাগজে কলমে মেসার্স শিরিন ট্রেডার্স থাকলেও মূল ক্ষমতা ডাঃ মোঃ রাশেদুজ্জামানের হাতে রয়েছে। বারবার বলা সত্ত্বেও খাবারের মানের কোনো উন্নতি হয়নি। ভয়ে মুখ খুলতে পারেন না সাধারণ কর্মচারীরা। এ বিষয়ে খাদ্য সরবরাহকারী শাহিনুর ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রাশেদুজ্জামানের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো প্রকারের তথ্য দিতে রাজি না।
এ বিষয়ে নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে এবং সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপডেট সংবাদ পেতে আলোকিত সমাচার পড়ুন, সংবাদটি শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি